গর্ভবতী মায়েরা কি কি খাবার খাবেন ?

গর্ভাবস্থায় শিশুর বৃদ্ধি অনেকাংশে নির্ভর করে মায়ের উপর, অর্থাৎ সুস্থ মা মানে সুস্থ শিশু শিশুর পরিপূর্ন বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় সকল প্রকার খাদ্যের যোগান দিতে হয় মাকে মা যে খাবার খাবেন শিশুও সেই খাবার খেয়ে পুষ্টি লাভ করে এ কারনে স্বাভাবিক মহিলাদের তুলনায় একজন গর্ভবতী মায়ের খাবারের প্রয়োজনীয়তা অনেক বেশি সঠিক পরিমানে খাবার গ্রহন না করলে সন্তান ঠিকমত বৃদ্ধি পাবে না ফলে সন্তান অপুষ্টি নিয়ে জন্মাবে   ধরনের শিশুর মৃত্যুর ঝুঁকি অনেক বেশি গর্ভবতী অবস্থায় কি খাবেন এবং কোন খাবার গর্ভের সন্তান এবং মায়ের জন্য প্রয়োজন তা নিচে আলোচনা করা হলো

প্রোটিন বা আমিষঃ প্রোটিন শরীরের গঠন ও বৃদ্ধিতে সহায়তা করে । মাছ, মাংস, ডিম, দুগ্ধজাত দ্রব্য, মটরশুটি, ডাল, বাদাম, ইত্যাদি বেশি পরিমানে খাবেন ।

ক্যালসিয়ামঃ গর্ভাবস্থায় মায়ের শরীরে ক্যাসিয়ামের প্রয়োজন সবচেয়ে বেশি । গর্ভাবস্থায় শেষ তিন মাসে শিশুর হাড় ও দাঁতের গঠনের জন্য আনেক ক্যালসিয়ামের প্রয়োজন হয় । দুধ, দুগ্ধজাত দ্রব্য, মাছ, বাদাম, কমলা লেবু, শুকনো ফল, সবুজ পাতা সহ শাক – সবজি, ফুল কপি ও তৈলবীজ খাবারের প্রচুর পরিমানে ক্যাসিয়াম আছে ।

আয়রনঃ আমাদের দেশের বেশির ভাগ গর্ভবতী মহিলাই রক্তশূন্যতায় ভুগে । রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধ করার জন্য মাকে আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে । গরু কিংবা খাসির কলিজা, বাচ্চা মুরগি, ডিম, মাছ, কলা, কচুশাক, পালং শাক, এ সবের মধ্যে প্রচুর পরিমানে আয়রন আছে ।

ফলিক এসিডঃ কোষ বিভাজনে ফলিক এসিডের বড় ধরনের ভূমিকা থাকার কারনে গর্ভাবস্থায় প্রচুর পরিমানে ফলিক এসিড দরকার । ফলিক এসিড শিশুর মেরুদন্ড গঠনে সহায়তা করে । ফলিক এসিড সবুজ সবজিতে পাওয়া যায় ।

ভিটামিন – এঃ ভিটামিন – এ এর অভাবে বাচ্চাদের রাত কানা রোগ হয় । এ ছাড়া হাড় ও অভ্যন্তরীণ অঙ্গ সমূহের গঠনের জন্য ভিটামিন – এ প্রয়োজন । মাংস, ডিম, তৈলাক্ত মাছ, দুগ্ধ জাত দ্রব্য, তেল ও বাদামে ভিটামিন –এ আছে ।

ভিটামিন – বিঃ এ সময় অনেক গর্ভবতী মহিলাদের কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয় । এই ভিটামিন কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং শক্তি বাড়ায় । যেমন – কলিজা, মাংস, যকৃত, মাছ, দুধ, দই, ডিম, ডাল, আটা, গম, ভট্টা, কলা, পাকা বেল, পেয়ারা, পাকা পেঁপে, জাম, কাঁঠাল, লিচু, বাদাম, সবুজ শাক সবজি, ঢেঁকি ছাটা চাল, সয়াবিন, সবুজ ফুল কপি, সিম, বাঁধা কপি ইত্যাদি ভিটামিন – বি সমৃদ্ধ খাবার ।

ভিটামিন – সিঃ ভিটামিন – সি শিশুর হাড় তৈরীতে সাহায্য করে । ভিটামিন – সি সমৃদ্ধ খাবার যেমন – আমলকি, পেয়ারা, কমলা লেবু, বাতাবী লেবু, সবুজ শাক সবজি, টমেটো, এবং আলু খেতে হবে । মনে রাখবেন, বেশিক্ষন রান্না করলে ভিটামিন নষ্ট হয়ে যায় ।

ভিটামিন – ইঃ ভিটামিন – ই রক্ত সঞ্চলনে সাহায্য করে । আপেল, বাদাম, গাজর, বাঁধা কপি, ডিম, অলিভ তেল, ও সূর্যমূখী বীজে ভিটামিন – ই পাওয়া যায় ।

জিংকঃ গর্ভবস্থায় প্রথম তিন মাস জিংক ও ফলিক এসিডের ভূমিকা অপরিসীম । জিংক গর্ভপাত রোধ করে এবং শিশুর ওজন বাড়ায় । এই জিংক পাওয়া যাবে প্রানিজ প্রোটিনে । তাছাড়াও চিনে বাদাম, মিষ্টি কুমড়ার বীজ, গম এসবে প্রচুর পরিমানে জিংক থাকে যা আপনার গর্ভাবস্থায় চাহিদা পূরনে সক্ষম ।

ভিটামিন ট্যাবলেটঃ গর্ভাবস্থায় শরীরে অতিরিক্ত ভিটামিনের প্রয়োজন হয় । এই অতিরিক্ত ভিটামিনের চাহিদা খাবারের মাধ্যমে পূরন করা সম্ভব না হলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ভিটামিন ট্যাবলেট গ্রহন করতে হবে ।

0 comments: